শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৫:৩৪ অপরাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট :: সংকট আরও বাড়ছে দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কায়। আর্থিক দুর্গতি এই দ্বীপরাষ্ট্রকে চরম দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দিয়েছে। তার বাড়ানো হাতের তালুতে, ৪৯ বছর বয়সি নিলান্থি গুনাসেকেরা পরিবারের সদস্যদের জন্য শুকনো মাছ মুঠোয় চেপে ধরে রেখেছেন। কারণ, তাঁর পরিবারের কাছে খাবার আর কিছুই নেই। এই চরম দুর্গতির চিহ্ন এখন গোটা দ্বীপরাষ্ট্রের পরতে পরতে।
কয়েক দশকের মধ্যে এর চেয়ে চরম আর্থিক সংকট আর দেখেনি শ্রীলঙ্কা। হাতে ধরে রাখা মাছটুকু দেখিয়ে গুনাসেকেরা বললেন, ‘এখন আমাদের পরিবারের মাছ কেনার সামর্থ্যও নেই। মাংস তো দূরের ব্যাপার। দুই সপ্তাহ আমরা কোনও মাছ কিনতে পারিনি। অনেক কষ্টে এই মাছ সংগ্রহ করেছি। এটাই আমাদের জন্য শেষ প্রোটিন।’
করোনা অতিমারী, ক্রমবর্ধমান তেলের দাম আর আগের সরকারের আর্থিক অব্যবস্থা। সব মিলিয়ে একের পর এক কঠিন আঘাতে বিপর্যস্ত দ্বীপরাষ্ট্রবাসী। ভারতের ঠিক পরের বছরই, ১৯৪৮ সালে ভারতের মতই ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করেছিল শ্রীলঙ্কা। তার পর এই প্রথম তারা সবচেয়ে বড় আর্থিক সংকটের মধ্যে পড়েছে। এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
উৎপাদন নেই। জিনিসপত্রের ব্যাপক দাম। জ্বালানি নেই, খাদ্য-ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে না। শ্রীলঙ্কা যেন এককথায় নেই মামার রাজ্য। কয়েক মাস ধরে চলা রাস্তার বিক্ষোভ এখন শান্ত। জুলাইয়ে এই বিক্ষোভ পদত্যাগী প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপক্ষকে দ্বীপরাষ্ট্র ছেড়ে পালাতে বাধ্য করেছে। কিন্তু, তারপরও স্বস্তি ফেরেনি। ২ কোটি ২০ লক্ষ বাসিন্দার দ্বীপরাষ্ট্রে এখনও এক-চতুর্থাংশ মানুষ আধপেটা খেয়ে, পুষ্টির অভাবের মধ্যে দিনগত পাপক্ষয় করছেন।
হাহাকারের সঙ্গেই বেড়েছে অপরাধ। গুনাসেকেরা জানিয়েছেন, কয়েক মাস আগে চোরেরা তাঁর বাড়িতে ঢুকে কুকার, গ্যাস সিলিন্ডার চুরি করে নিয়ে গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের এখন আর গ্যাস সিলিন্ডার বা কুকার কেনার সামর্থ্য নেই। তাই কাঠ বা অন্য কিছু দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে রান্না করতে বাধ্য হচ্ছি।’